আষাঢ়ের ঢলের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের ভুতবাড়ি গ্রামের শতাধিক পরিবারের ঘরের দুয়ারে পানি প্রবেশ করেছে। তলিয়ে গেছে গ্রামের একমাত্র রাস্তাটি। ফিবছর বর্ষায় পানিবন্দি হয়ে বড় কষ্টে ভোগেন গ্রামবাসী। আর স্বপ্ন দেখেন পরের বছর সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু তাদের স্বপ্ন আর পূরণ হয় না।
এদিকে জলাবদ্ধতার কারণে গ্রামের তিন ফসলি জমিতে এখন ফসল ফলানোই দুরুহ হয়ে পড়েছে। মহামারী করোনার দুঃসময়ে জনগণের দুর্ভোগ সীমাহীন হলেও স্থানীয় জনপ্রনিধিরা বিষয়টি আমলে নিচ্ছেন না। প্রতিবছর উপজেলায় কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন দেখানো হলেও এলাকার এই জরুরি বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব নেই। তাই ওই গ্রামের মানুষ এ জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।
গ্রামবাসির পক্ষে হবিবর, আবু হানিফ ও কোরবান আলী জানান, প্রায় পাঁচ বছর হলো তাদের এই জলাবদ্ধতার ভোগান্তি। পয়ঃনিষ্কাশনের পানি একাকার হয়ে জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। জলাবদ্ধতার কারণে ঘরে ঘরে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে নারী-শিশু ও ছোট ছেলে মেয়েদের চলাফেরা খেলাধুলা বন্ধ হয়ে পড়েছে। সাপ ও পানিজাত পোকা বাড়িতে উঠে আসছে। গবাদি পশু গরু ছাগল, মুরগী পালন কঠিন হয়ে পড়েছে।
তারা আরো জানান, আগে বৃষ্টির পানি এখান থেকে নিষ্কাশন হয়ে ভুতবাড়ি বিলে পড়ত। কিন্ত পানি নিষ্কাশনের সেই পথে বাড়িঘর নির্মাণ করায় তা বন্ধ হয়ে গেছে। এরপর থেকে গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হতে থাকে। গ্রামের জমিতে এক সময় তিনটি ফসল হতো। এখন কোনো ফসল হয় না। পানি অপসারণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এখন সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। জমাট পানির দুর্গন্ধে মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে অনবরত।
গ্রামের মাঝপথ দিয়ে ভান্ডারবাড়ি, মরিচতলা, রঘুনাথপুর ও ফাটাগাড়িসহ কমপক্ষে ১০ গ্রামের মানুষ যাতায়াত করেন। পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় গ্রামের সড়কটি তলিয়ে গিয়ে সেখানে এখন হরহামেশাই ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। রাস্তার পানির নীচে লুকানো খানাখন্দ তৈরি হওয়ায় দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে পথচারীরা। নোংরা, পচা, ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি মাড়ানোর কারণে দেখা দিয়েছে চর্মরোগ। স্থানীয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সদস্যকে বিষয়টি বারবার বলার পরও কোনো কাজ হচ্ছে না।
ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আতিকুল করিম আপেল বলেন, গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করতে পিভিসি প্লাষ্টিক পাইপ দিয়ে অথবা পাকা একটি ড্রেন নির্মান করে পাশের একটি বিলে সংযোগ করে দিলেই জলাবদ্ধতার নিরসন হবে। এ বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসির সাথে কথা হয়েছে। দুই একদিনের মধ্যেই এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা হবে।